সিফিলিস হল একধরনের যৌণ-বাহিত সঙ্ক্রমন এর মূলে আছে একধরনের ব্যাক্টেরিয়া যার নাম হল Treponema pallidum।
সিফিলিস এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের সংক্রমন হয় সেক্স করবার সময়। যদি কারও
সিফিলিস ফুশকুড়ি থাকে তবে তার সাথে শারিরিক স্পরশ হলেও সিফিলিস হতে পারে।
রক্ত আদান-প্রদান এর মাধ্যমেও সিফিলিস হতে পারে। একজন গর্ভবতী মহিলার
সন্তানও সিফিলিস এ আংক্রান্ত হতে পারে। একে বলা হয় জন্মগত সিফিলিস।
যেভাবে ছড়ায় :-
- আক্রান্ত ব্যাক্তির সাথে অনিরাপদ যৌনমিলনে
- রোগাক্রান্ত ব্যাক্তির রক্ত শরীরে গ্রহন করলে
- আক্রান্ত মা যে শিশুর জন্ম দেয় যেই শিশু
- আক্রান্ত ব্যাক্তির সাথে অনেকক্ষণ শারীরিক সংস্পর্শে থাকলে
- আক্রান্ত ব্যাক্তির সাথে অনেকক্ষণ চুমু খেলে
- আক্রান্ত মায়ের দুধ পান করলে মনে রাখবেন, এই রোগ কখনই খাওয়ার পাত্র, চামচ, গামছা বা টাওয়েল, ন্যাপকিন, সুইমিং পুল, বাথটাব, কিংবা ব্যবহৃত জামাকাপড় দিয়ে ছড়ায় না।
রোগের সুপ্তিকাল :-
নয় থেকে নব্বই দিন পর্যন্ত হতে পারে। অর্থাৎ জীবাণু দেহে প্রবেশে পর রোগের
প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিতে উপরেলি্লখিত সময়ের প্রয়োজন হয়। তবে সাধারণত ১৫
থেকে ২১ দিনের মধ্যেই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দেয়।
সিফিলিসের শ্রেণীবিভাগ এবং লক্ষণ :-
সিফিলিসকে মূলত দুভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন-জন্মগত অর্থাৎ আক্রান্ত
মায়ের থেকে গর্ভাবস্থায় শিশুটি যদি এ রোগে আক্রান্ত হয় তবে সেটাই হলো
জন্মগত। আর অন্যটি হলো অর্জিত অর্থাৎ জন্মের সময় যে সিফিলিস রোগে আক্রান্ত
ছিল না কিন্তু পরবর্তী সময় যে কোনোভাবে সে যদি এ রোগে আক্রান্ত হয়, তবে
সেটাই হলো অর্জিত সিফিলিস। অর্জিত সিফিলিসকে আবার চারটি স্তরে বিভক্ত করা
হয়েছে। যেমন প্রাথমিক সিফিলিস, সুপ্ত সিফিলিস ও তৃতীয় স্তর বা প্রান্তিক
সিফিলিস।
প্রাথমিক সিফিলিস :-
প্রাথমিক সিফিলিসে যে ক্ষত পাওয়া যায় তাকে বলা হয় হান্টারের ক্ষত। কালজয়ী
চিকিৎসক হান্টার এ ভয়াবহ জীবাণু স্বেচ্ছায় নিজ দেহে উপ্ত করে এ রোগের
গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন। ফলে তার নামেই এ ক্ষতের
নাম করা হয় ইন্টারের ক্ষত, যা এ প্রাথমিক স্তরে ছোট গুটিকা বা কুড়ি আকারের
সৃষ্টি হয়। এ ক্ষত সাধারণত যৌনাঙ্গের মুখে এবং পায়ুপথে দেখা যায় এবং
সংখ্যায় সাধারণত একটি এবং বেদনামুক্ত হয়। যা থেকে প্রথম অবস্থায় রস বের হতে
থাকে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই ক্ষত শুকিয়ে যায় বা যেতে পারে তবে তা পুনরায়
দেখা দিতে পারে। ক্ষত শুকিয়ে যাওয়া মানে কিন্তু জীবাণুমুক্ত হওয়া নয়।
মহিলাদের ক্ষেত্রে এ ক্ষত বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অজ্ঞাত থেকে যায় কারণ বেশির
ভাগ ক্ষেত্রেই এ ক্ষত ব্যথামুক্ত হওয়ার কারণে যৌনের ক্ষত অনেক ক্ষেত্রেই
অজানা থেকে যায়।
দ্বিতীয় স্তর বা মাধ্যমিক সিফিলিস :-
প্রাথমিক ক্ষত শুরু হওয়ার ৬-১.২ সপ্তাহ পরে সিফিলিসের দ্বিতীয় স্তর শুরু
হয়। এ সময় ত্বকের ফুসকুড়ি যা তিলকার দাগ আকারে দেখা যায়। যা হাত ও পায়ের
তালুতে নির্দিষ্টভাবে দেখা যায় এবং তাতে কোন চুলকানি থাকে না। পায়ু
পার্শ্বস্থ এলাকায় বর্তুলাকার ক্ষত দেখা যায় যা অত্যন্ত সংক্রামক। এই স্তরে
শরীরের বিভিন্ন লথিকা গ্রন্থিগুলো ফুলে উঠতে পারে কিন্তু তা বেদনায়দক থাকে
না। শতকরা ৩০ ভাগ ক্ষেত্রে মেরুসজ্জা রসে পরিবর্তন এবং মস্তিস্ক আবরণীতে
প্রদান দেখা দিতে পারে।
সুপ্ত সিফিলিস :-
সুপ্ত অবস্থায় এ রোগ ২ থেকে শুরু করে ৩০ বছর পর্যন্ত এমনকি সারাজীবন তা
সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। আর এ অবস্থার সৃষ্টি তখনই হয় যখন এ রোগের
উপযুক্ত চিকিৎসা না হয়। যেহেতু এ অবস্থায় কোন উপসর্গ থাকে না কাজেই রক্ত
পরীক্ষা ছাড়া তা বোঝার কোন উপায় নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আকস্মিক রক্তে
পরীক্ষায় এর ধরা পড়ে।
তৃতীয় স্তর বা প্রাম্ভিক সিফিলিস :-
৫-১৫ বছর পর অচিকিৎসিত সিফলিসের মধ্যে থেকে চলি্লশ শতাংশ প্রাম্ভিক সিফলিস হিসেবে দেখা দেয়।
রোগের জটিলতা কি কি :-
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বলে ৩০ শতাংশ মেয়াদি সিফিলিস প্রাকৃতিভাবেই
ভালো হয়ে যায়। তবে মেয়াদি সুপ্ত অবস্থায় তা জীবনব্যাপী থাকতে পারে যার
সংখ্যাও মোটামুটিভাবে ৩০ শতাংশে রকম নয়। এর বাইরেও ১৫ শতাংশ গামা হিসেবে
দেখা দেয় অর্থাৎ এক্ষত্রে রক্তনালী তথা ধমনীতে প্রদান এবং বদ্ধতা সর্বোপরি
কোষ মৃত্যু দেখা দেয় যার ফলে স্থানটি ফুলে ওঠে সেটাই হলো গামা। এর বাইরও
অত্যন্ত গুরুত্ববপূর্ণ জটিলতা যেমন হৃদযন্ত্রের সিফিলিস (১২.৫%) যার থেকে
হৃদযন্ত্রের ও মস্তিস্কের নানান সমস্যা এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে থাকতে
পারে।
প্রতিরোধ করবেন কিভাবে :-
- যৌন সঙ্গীর সিফিলিস আছে কিনা নিশ্চিত হন।
- সিফিলিস থাকলে অবশ্যই, জোর করে হলেও চিকিৎসা করান।
- সিফিলিস আক্রান্তদের সাথে কোন ধরনের যৌন কারযক্রমে যাবেন না। কনডম ব্যাবহার করেও না।
- কমার্শিয়াল সেক্স ওয়ার্কার দের কাছে যাবেন না।
- রোগীকে ঘৃণা করবেন না, রোগকে ঘৃণা করুন।
- এই রোগ কোনক্রমেই পুষে রাখবেন না।
- ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ খাবেন না।
কি কি চিকিৎসা রয়েছে :-
এই রোগটি এতই ভয়ঙ্কর যে চিকিৎসা না করে ফেলে রাখলে মারাত্মক পরিস্থিতির
জন্ম দিতে পারে। আর এ রোগটি এমনই যে মানুষ এর কথা গোপন করেই রাখতে চায়। আর
এর বেশি ভুক্তভোগী হয় মেয়েরা। কারন তারাই বেশি রোগ গোপন করে রাখতে পছন্দ
করে। এ রোগর চিকিৎসায় অ্যালোপ্যাথরা বেশ কিছু ঔষুধ ব্যাবহার করেন তার মধ্যে
উল্লেকযোগ্য : Penicillin G injection, Ceftriaxone, Doxycyclin, Azithromycin.
হোমিওপ্যাথিক প্রতিবিধান :-
সিফিলিস চিকিত্সায় হোমিওপ্যাথিতেও রয়েছে সবচেয়ে কার্যকর এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন ঔষুধ যেগুলো রোগটির যাবতীয় যন্ত্রনাদায়ক সব উপসর্গগুলো নির্মূল করে খুব দ্রুত আরোগ্যের দিকে নিয়ে যায়। হোমিওপ্যাথি যেহেতু রোগের রুট লেভেল থেকে কাজ করে তাই যে কোন রোগ একবার ভালো হওয়ার পর তা আর পূনরায় দেখা দেয় না। ভুল করেও রোগ নিয়ে বসে থাকবেন না। সিফিলিসে আক্রান্ত হলে কোন প্রকার সংকোচ না করে ভাল একজন হোমিওপ্যাথের সাথে যোগাযোগ করুন। দেখবেন অল্প কিছু দিনের মধ্যেই আপনি আবার স্বাভাবিক সুস্থ জীবন যাপন উপভোগ করতে পারছেন। ভাল থাকবেন। আপনাদের সুখী এবং সুন্দর জীবনই আমার কাম্য।
হোমিওপ্যাথিক প্রতিবিধান :-
সিফিলিস চিকিত্সায় হোমিওপ্যাথিতেও রয়েছে সবচেয়ে কার্যকর এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন ঔষুধ যেগুলো রোগটির যাবতীয় যন্ত্রনাদায়ক সব উপসর্গগুলো নির্মূল করে খুব দ্রুত আরোগ্যের দিকে নিয়ে যায়। হোমিওপ্যাথি যেহেতু রোগের রুট লেভেল থেকে কাজ করে তাই যে কোন রোগ একবার ভালো হওয়ার পর তা আর পূনরায় দেখা দেয় না। ভুল করেও রোগ নিয়ে বসে থাকবেন না। সিফিলিসে আক্রান্ত হলে কোন প্রকার সংকোচ না করে ভাল একজন হোমিওপ্যাথের সাথে যোগাযোগ করুন। দেখবেন অল্প কিছু দিনের মধ্যেই আপনি আবার স্বাভাবিক সুস্থ জীবন যাপন উপভোগ করতে পারছেন। ভাল থাকবেন। আপনাদের সুখী এবং সুন্দর জীবনই আমার কাম্য।
******** তথ্যসূত্র: ********
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comment and give me Suggest any time any way in my comment box or email address.